হাবিবুররহমানবাদল: মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে, কেউ হেডফোনে গান শুনতে শুনতে, কেউ আবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অরক্ষিত রেলক্রসিং পারাপার হতে গিয়ে ট্রেনেকাটা মৃত্যুর দৃশ্য হরহামেশাই চোখে পড়ে নগরবাসীর। তারপরও যেন কিছুতেই থামছে না ঝুঁকি নিয়ে পারাপারের দৃশ্য। শহরের চাষাঢ়া রেলক্রসিং থেকে শুরু করে ১ নম্বর রেলগেট পর্যন্ত রেললাইনের ওপর দিয়ে অহরহ মানুষ যাতায়ত করছে। তার ওপর ১ নম্বর গেট থেকে ২ নম্বর গেট পর্যন্ত রেললাইনের দুই পাশ জুড়ে শত শত অবৈধ দোকান গড়ে উঠেছে। আর এসব দোকানে মালামাল কিনতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে নগরবাসী। শহরের উকিলপাড়া, গলাচিপা, বালুর মাঠসহ বেশ কয়েকটি লেভেলক্রসিং দিয়ে এভাবেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ, ছোট-বড় যানবাহন। ফলে সময় বাঁচানোর নামে জীবনবাজি রাখতে গিয়ে দুর্ঘটনার মুখে পড়ছেন অনেকে। এভাবে প্রায় প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটলেও সচেতন হয়নি মানুষ। গতকাল শুক্রবার দুপুরে উকিলপাড়া রেলক্রসিংয়ে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে রেললাইনের দুই পাশে অবৈধভাবে লোহার অবকাঠামো দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে বেশ কিছু দোকান-পাট। গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম এ রেলক্রসিং দিয়ে রিকশায় করে, অনেকে আবার পায়ে হেঁটে পার হচ্ছেন। ট্রেন আসছে দেখেও অবলীলায় রেলক্রসিং পার হচ্ছেন তারা। মাত্র কয়েক হাত দূরে ট্রেন দেখেও যাত্রী নিয়ে পার হচ্ছে একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা। এভাবেই প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে রেললাইন পার হচ্ছেন মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দা মাহমুদ মিয়া বলেন, এ লেভেলক্রসিংয়ে সিগন্যালবার ও গেটম্যান নেই। বেশ কয়েকবার মানুষ ও যানবাহন পারাপার হতে গিয়ে ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনা ঘটেছে। সব সময় আতঙ্কের মধ্যে লেভেলক্রসিং পার হতে হয়। রেললাইন সংলগ্ন একটি মার্কেটের এক দোকানদার বলেন, ‘এখানে লেভেলক্রসিংয়ে গেটম্যান ও সিগন্যালবারের প্রয়োজনীয়তা আমরা ছাড়া আর কেউ উপলব্ধি করে না। ঝুঁকি নিয়ে আমাদের লেভেলক্রসিং দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এ এলাকার ব্যবসায়ী হিসেবে আমরা নিরুপায়।’ পথচারী রিপন আহমেদ বলেন, ‘এখান দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই এ ধরনের চিত্র আমাদের চোখে পড়ে। মানুষ দ্রুত পার হওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো করে পার হতে চায়। ফলে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। স্থানীয়রা আরো জানান, ‘এটি শহরের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও রেলক্রসিং। এখান দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ নগরীর প্রাণকেন্দ্র চাষাড়া ও অন্যান্য এলাকায় যাতায়াত করে। পাশাপাশি এসব এলাকা থেকে কাজ শেষে প্রতিদিন তারা আবার নিজ বাড়িতে ফেরেন এ রেলক্রসিং পার হয়ে। কিন্তু এ রেলক্রসিংয়ে নেই গেটম্যান বা সিগন্যালবার। এক সময় বাঁশ দিয়ে দুই পাশ আটকে দিতাম আমরা। সেই বাঁশ ভেঙে যাওয়ায় ক্রসিং পার হতে গিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিতে হয় আমাদের। ’ নারায়ণগঞ্জ স্টেশন মাস্টার গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘উকিলপাড়া রেলক্রসিংটি আমাদের তথা রেলওয়ের অনুমোদিত না। তবে চলমান ডাবল রেল লাইন প্রকল্পের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের সবগুলো রেলক্রসিংয়ের জন্য সিগন্যালবার নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে সূত্র:ইত্তেফাক, ০৭ নভেম্বর, ২০২০