অবশেষে শুরু হচ্ছে চট্টগ্রামের দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণকাজ। গতকাল এর দুই প্যাকেজের ঠিকাদার নিয়োগ চুক্তি সই হয়েছে। প্রথম প্যাকেজের (দোহাজারী-চকরিয়া) কাজ যৌথভাবে পেয়েছে চায়নার সিআরইসি ও বাংলাদেশের তমা কনস্ট্রাকশন। আর দ্বিতীয় প্যাকেজের (চকরিয়া-রামু-কক্সবাজার) কাজ পেয়েছে যৌথভাবে চায়নার সিসিইসিসি ও বাংলাদেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার।
চুক্তি দুটিতে সই করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষে প্রকল্প পরিচালক মো. মফিজুর রহমান ও প্রথম প্যাকেজের চায়না সিআরইসির প্রতিনিধি ঝং জুগাও এবং দ্বিতীয় প্যাকেজের সিসিইসিসির প্রেসিডেন্ট ঝুও ডিয়ানলং। প্রথম প্যাকেজের চুক্তিমূল্য প্রায় দুই হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা। আর দ্বিতীয় প্যাকেজের চুক্তিমূল্য প্রায় তিন হাজার ৫০২ কোটি টাকা। চুক্তির মেয়াদ তিন বছর।
প্রকল্পের প্যাকেজ দুটির আওতায় ১০২ কিলোমিটার নতুন ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণ করা হবে। এতে ১৮৪টি ছোট-বড় সেতু, ৯টি স্টেশন বিল্ডিং, প্ল্যাটফরম ও শেড নির্মাণ করা হবে। এছাড়াও সমুদ্রের ঝিনুকের আদলে কক্সবাজারে একটি আইকনিক স্টেশন বিল্ডিং বানানো হবে। তবে প্রকল্পটির তৃতীয় প্যাকেজের রামু থেকে শুরু হয়ে মিয়ানমার সীমান্ত ঘুমধুম পর্যন্ত অংশের ঠিকাদার এখনও চূড়ান্ত হয়নি। ফলে ওই অংশের কাজ পরে শুরু করা হবে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার প্রকল্পটির পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে দোহাজারী-কক্সবাজার-ঘুমধুম রেলপথ নির্মাণে মোট ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে ১৫ কোটি ডলার বা প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেবে এডিবি। বাকি অর্থ সরকারি তহবিল থেকে সরবরাহ করা হবে।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে রেলপথমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক বলেন, বর্তমান সরকার রেল খাতের প্রতি অধিক গুরুত্ব দিয়েছে। এ জন্যই বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে। তার ফলে আমরা নতুন প্রকল্প গ্রহণ করতে পারছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বড় বড় প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, রেল খাত এগিয়ে চলেছে। এ রেললাইন নির্মিত হলে পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজারে দেশি-বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। এটি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। এ রেললাইন দ্বারা বাংলাদেশ ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়েতে যুক্ত হবে।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আমজাদ হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. মোফাজ্জেল হোসেন এতে সভাপতিত্ব করেন।
উল্লেখ্য, দোহাজারী-কক্সবাজার-ঘুমধুম রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি নেওয়া হয় ২০১০ সালে। ২০১৩ সালের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ করার কথা ছিল। সে সময় এ রেলপথ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় এক হাজার ৮৫২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। তবে ২০১৬ সালে ১৯ এপ্রিল প্রকল্পটি সংশোধন করা হয়। এতে ৮৭৪ শতাংশ ব্যয় বাড়ে প্রকল্পটির। সে সময় দোহাজারী-কক্সবাজার অংশটি অবশ্যই ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে শেষ করার নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। তবে এটি নির্মাণ শেষ করতে বিলম্ব হবে।
সুত্র:শেয়ার বিজ