নিউজ ডেস্ক: জনবল সংকটে দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে নাটোরের বাসুদেবপুর ও মালঞ্চি রেলস্টেশন। স্টেশন দুটি চালুর দাবিতে এলাকাবাসী নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দাবি জানিয়ে এলেও কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
স্থানীয়রা বলছে, শহরের পাশের এ দুটি রেলস্টেশন চালু হলে রেলক্রসিং সুবিধার পাশাপাশি সিডিউল বিপর্যয়ও কমে যাবে।
নাটোর রেলস্টেশন সূত্রে জানা যায়, ১৯২৭ বাসুদেবপুর রেলস্টেশনটি চালু হয়। কিন্তু পাঁচ বছর আগে জনবল স্বল্পতার কারণ দেখিয়ে স্টেশনটি বন্ধ ঘোষণা করে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে। এরপর বেসরকারি উত্তরা এক্সপ্রেস ও রকেট মেইল প্লাটফর্ম থেকে দূরের লাইনে দাঁড়ায়। কোনো স্টেশন মাস্টারও থাকেন না। এতে যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে অনেক কষ্টে ট্রেনে চড়েন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাসুদেবপুর স্টেশনের যে ক’টি কক্ষ এখনো টিকে আছে, তার বেশির ভাগের ভগ্নদশা। স্টেশন মাস্টারের কক্ষটি সবসময় তালাবদ্ধ থাকে। বিদ্যুৎ সংযোগও নেই। স্টেশনের বেশির ভাগ যন্ত্রাংশ মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে। স্টেশন মাস্টার নিয়মিত আসেন না।
স্থানীয় শফিকুল ইসলাম বুলবুল জানান, স্টেশন চালু না থাকলেও স্টেশন মাস্টার আছেন। কিন্তু তিনি আসেন না। স্টেশনের লাইনের ওপর দিয়ে আন্তঃনগর ট্রেনগুলো চলাচল করলেও বিরতি দেয় না। এ কারণে এই এলাকার মানুষকে নাটোর স্টেশনে গিয়ে ট্রেনে উঠতে হয়।
একই অবস্থা বাগাতিপাড়া উপজেলার মালঞ্চি রেলস্টেশনের। এলাকাটি কৃষিভিত্তিক হওয়ায় আগে এ স্টেশন ব্যবহার করে কৃষিপণ্য রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় নেয়া হতো। কিন্তু পাঁচ বছর ধরে স্টেশনটি বন্ধ। এখানেও দুটি বেসরকারি ট্রেন প্লাটফর্ম সংলগ্ন লাইন ছেড়ে দূরের লাইনে কিছু সময়ের জন্য থামে। যাত্রীরা তখন হুড়োহুড়ি করে ওঠেন। অনেক সময় এভাবে ট্রেনে উঠতে গিয়ে অনেকে আহতও হন।
স্থানীয় মিজানুর রহমান মিজান বলেন, প্রতিদিনই যাত্রী সাধারণ বিশেষ করে নারী ও শিশুরা ট্রেনে উঠতে ও নামতে গিয়ে কেউ না কেউ পড়ে আহত হচ্ছেন। এছাড়া স্টেশনের সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে বাসুদেবপুর ও মালঞ্চি স্টেশনের দায়িত্বে থাকা স্টেশন মাস্টার অশোক চক্রবর্তী বলেন, জনবল স্বল্পতার কারণে স্টেশন দুটি বন্ধ রয়েছে। স্টেশন মাস্টার থাকলেও পয়েন্টম্যান না থাকায় লাইনে সংযোগ দেয়া সম্ভব হয় না। এ কারণে প্লাটফর্মে ট্রেন দাঁড়ায় না। তবে স্টেশন দুটি চালু করা গেলে ট্রেন ক্রসিং করা সুবিধা হবে এবং একই সঙ্গে সিডিউল বিপর্যয় রোধে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি।
জনবল নিয়োগের জন্য পশ্চিমাঞ্চল রেল কর্তৃপক্ষ এবং রেলওয়ে মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। জনবল পাওয়া গেলেই স্টেশন দুটি চালু করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন নাটোর রেলস্টেশন মাস্টার মনিরুল ইসলাম।
সুত্র:বণিক বার্তা, জুলাই ০১, ২০১৮