শিরোনাম

মাস্টার ছাড়াই চলছে হিলি রেলওয়ে স্টেশনের কার্যক্রম

মাস্টার ছাড়াই চলছে হিলি রেলওয়ে স্টেশনের কার্যক্রম

মাস্টার ছাড়াই চলছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর দিনাজপুরের হিলি রেলওয়ে স্টেশনের সব কার্যক্রম। মাস্টার ছাড়াও প্রয়োজনীয় লোকবলের অভাবে স্টেশনটি অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এ অবস্থায় স্টেশনটি পার্শ্ববর্তী পাঁচবিবি ও বিরামপুর স্টেশন থেকে পরিচালিত হচ্ছে।

হিলি রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা যায়, ‘বি’ শ্রেণীর স্টেশন হওয়ায় বিধান অনুযায়ী এখানে তিনজন মাস্টার, পাঁচজন পয়েন্টম্যান, তিনজন বুকিং সহকারী ও দুজন পোর্টার থাকার কথা। কিন্তু এর বিপরীতে হিলি স্টেশনে এখন শুধু একজন পয়েন্টম্যান রয়েছেন। তাকেই স্টেশনের যন্ত্রপাতিসহ লেভেল ক্রসিং পাহারা দিতে হচ্ছে।

হিলি রেলস্টেশন দিয়ে প্রতিদিন রাজশাহীগামী আন্তঃনগর বরেন্দ্র এক্সপ্রেস, তিতুমীর এক্সপ্রেস ও খুলনাগামী রকেট মেইল ট্রেন যাত্রাবিরতি করে। এছাড়া এ পথ দিয়ে প্রতিদিন আরো ছয় জোড়া ট্রেন চলাচল করে। বর্তমানে এ স্টেশন দিয়ে চলাচলকারী সব ট্রেনই দুই নম্বর লাইন দিয়ে চলাচল করছে।

হিলি থেকে বিরামপুরে সদ্য বদলি হওয়া সহকারী স্টেশন মাস্টার রুহুল আমিন জানান, হিলিতে যোগদানের পর থেকেই তিনি ও অন্য আরেকজন স্টেশন মাস্টার মিলে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এর মধ্যে গত ডিসেম্বরে অন্যজন অবসরে যান। এরপর থেকে তিনি একাই হিলি স্টেশনের দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় লোকবল না থাকায় হিলি রেলস্টেশনকে অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর এ স্টেশনের কার্যক্রম বিরামপুর ও পাঁচবিবি স্টেশন থেকে নিয়ন্ত্রণ করার প্রক্রিয়া শুরু করে ৮ জানুয়ারি তাকে বিরামপুরে বদলি করা হয়েছে।

হিলি রেলস্টেশনে দায়িত্বরত পয়েন্টম্যান মীর আলম জানান, নিয়ম অনুযায়ী দিনে তিনজন ও রাতে দুজন পয়েন্টম্যান থাকার কথা। কিন্তু আট বছর আগে যোগদান করার পর থেকেই এখানে তিনজন পয়েন্টম্যান দেখছেন। পরে সেখান থেকেও একজনকে কমিয়ে দুজন পয়েন্টম্যানকে দায়িত্ব দেয়া হয়। দুদিন আগে স্টেশন মাস্টার ও অন্য পয়েন্টম্যানকে বদলি করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় এখানে কেবল তিনি একাই রয়েছেন।

তিনি আরো জানান, এখন বিরামপুর ও পাঁচবিবির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে ট্রেন চলাচল করছে। যে কারণে ট্রেনগুলো প্লাটফর্মে না থামিয়ে দুই নম্বর লাইনে থামানো হচ্ছে। এতে যাত্রীদের ওঠানামা ও পণ্য পরিবহনে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

হিলি রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক শাহ আলম বলেন, হিলি রেলওয়ে স্টেশনটি সীমান্তসংলগ্ন। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে এখানে সার্বক্ষণিক স্টেশন মাস্টার থাকা প্রয়োজন। এছাড়া হিলিতে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর রয়েছে। বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন বহু ব্যবসায়ী এখানে আসেন। ফলে সবদিক থেকেই হিলি রেলস্টেশনের গুরুত্ব রয়েছে। এ কারণে এখানে দ্রুত মাস্টার নিয়োগ দিয়ে স্টেশনটি চালু করা হবে বলে আশা করছি।

বাংলা হিলি কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক শাহিনুর রেজা শাহীন জানান, হিলি স্টেশন থেকে মাস্টার প্রত্যাহার করে স্টেশনটি বন্ধ করে দেয়ায় যাত্রীদের চরম ভোগান্তি হচ্ছে। ভোগান্তি হচ্ছে পণ্য পরিবহনেও। তাছাড়া মাস্টার ছাড়া ট্রেন চলাচল করার কারণে এখানে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও রয়েছে।

হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি মো. হারুন উর রশীদ জানান, হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রফতানিকাজের গতি আনার জন্য রেলের বহুমুখী ব্যবহারের কথা ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে এ রেলস্টেশনটিই অকার্যকর করায় সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

সুত্র:বণিক বার্তা, জানুয়ারি ১১, ২০১৮


About the Author

RailNewsBD
রেল নিউজ বিডি (Rail News BD) বাংলাদেশের রেলের উপর একটি তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল।

Comments are closed.