শিরোনাম

মিরসরাইয়ে ৩০ কিমিতে অর্ধশত অরক্ষিত লেভেল ক্রসিং

মিরসরাইয়ে ৩০ কিমিতে অর্ধশত অরক্ষিত লেভেল ক্রসিং

নিউজ ডেস্ক: পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের চট্টগ্রাম অংশের মিরসরাই উপজেলার ডাবল লাইন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে রয়েছে। এখানে ৩০ কিলোমিটার রেললাইনে প্রায় অর্ধশত লেভেল ক্রসিং অরক্ষিত। অবৈধ লেভেল ক্রসিংগুলো বন্ধ করে দিলেও রাতের আঁধারে ঘেরাবেড়া ফেলে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

মিরসরাইয়ের চিনকির আস্তানা রেলস্টেশনের এক কর্মকর্তা জানান, মিরসরাই এলাকার ৩০ কিলোমিটার রুটে কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত লেভেল ক্রসিং রয়েছে মাত্র সাতটি। এর বাইরে বহু অবৈধ ক্রসিং রয়েছে, যার সঠিক হিসাব কর্তৃপক্ষের কাছেও নেই। এগুলো বন্ধে বারবার কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ নিলেও প্রভাবশালীদের কারণে কার্যকর হচ্ছে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিরসরাইয়ের ধুমঘাট রেল সেতু থেকে দক্ষিণের বারৈয়াঢালা পর্যন্ত গড়ে উঠেছে অন্তত ৫০টি অবৈধ লেভেল ক্রসিং। কাঠ ও অন্যান্য পণ্য পরিবহনে সুবিধার জন্য চোরাকারবারিরা এসব ক্রসিং তৈরি করেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এসব ক্রসিং বন্ধে একাধিকবার পদক্ষেপ নিলেও তা কার্যকর হয়নি।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে চিনকি আস্তানা রেলস্টেশনের একজন কর্মকর্তা জানান, বিভিন্ন সময় চোরাকারবারিদের প্রতিরোধে অবৈধ ক্রসিংগুলোয় লোহার খুঁটি দিয়ে ঘিরে দেয়া হয়। কিন্তু রাতের অন্ধকারে সব উপড়ে ফেলে দেয়া হয়।

এদিকে বৈধ সাতটি লেভেল ক্রসিংয়ের মধ্যেও কয়েকটি অরক্ষিত। বারইয়ারহাট, বিএসআরএম গেট, মহামায়া ছাড়া বাকি চারটিতে গেটম্যান নেই।

অনুমোদিত সাতটি লেভেল ক্রসিংয়ের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বারইয়ারহাট লেভেল ক্রসিং। এখানে সর্বশেষ গত রোববার ঘটে যায় ভয়াবহ একটি দুর্ঘটনা। ওইদিন প্রাণ হারান এক চিকিৎসকসহ দুজন। ২৫ জন আহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) এখনো চিকিৎসাধীন। এর আগেও অসংখ্য দুর্ঘটনা ঘটেছে, প্রাণহানিও কম হয়নি। এর মধ্যে বছর দুয়েক আগে একটি যাত্রীবাহী বাসকে ধাক্কা দেয় দ্রুতগামী ট্রেন। এ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় দুজন, আহত হয় অন্তত ৩০ জন। এছাড়া গত পাঁচ বছরে এখানকার ক্রসিংয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছে অন্তত ২০ জন।

সম্প্রতি ফটিকছড়ি সদর সংযোগ সড়কের আমবাড়ীয়া লেভেল ক্রসিং এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এখানে গেটম্যান তো দূরের কথা, গেটের কোনো অবকাঠামোই নেই। অথচ এ সড়কে প্রতিদিন অসংখ্য যাত্রীবাহী ও মালবাহী যানবাহন চলাচল করে।

স্থানীয়রা জানায়, এখানে কখনো গেট বা গেটম্যান দেয়া হয়নি। দুর্ঘটনা ঘটলে রেলের লোকজন এসে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয়ার চেষ্টা করে।

প্রায় একই রকম পরিস্থিতি বড়তাকিয়া স্টেশন এলাকার লেভেল ক্রসিংয়ের। এখানেও গেটম্যান নিয়োজিত থাকে না। অথচ দিনরাত ছোট যানবাহন চলাচল করছে।

এসব বিষয়ে কথা বলতে চিনকির আস্তানা রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার ওয়াহিদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বৈধ-অবৈধ অরক্ষিত ক্রসিংয়ের ব্যাপারে তার জানা নেই, এখন জানলেন। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে অবশ্যই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করবেন।

সুত্র:বণিক বার্তা, নভেম্বর ১১, ২০১৮


About the Author

RailNewsBD
রেল নিউজ বিডি (Rail News BD) বাংলাদেশের রেলের উপর একটি তথ্য ও সংবাদ ভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল।

Comments are closed.