সাইদ সবুজ:
নিয়ম না মেনে স্টেশন মাস্টার গ্রেড-৩ থেকে গ্রেড-২ পদোন্নতি পরীক্ষা নিয়ে নির্দিষ্ট প্রার্থীদের পদোন্নতি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান পরিবহন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। গুরুত্বপূর্ণ এ পরীক্ষা গ্রহণের কমপক্ষে দুই মাস আগে নোটিস দেওয়ার নিয়ম থাকলেও মাত্র ১০ দিনের নোটিসে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। এতে ৩৫ জন প্রার্থী পরীক্ষার সময় বাড়ানোর আবেদন করেছেন।
এদিকে গত কয়েক দিন ধরে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সদরদফতরে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী একাধিক পরীক্ষার্থীকে প্রশ্নের সমাধান খুঁজতে বিভিন্ন কর্মকর্তার দফতরে দেখা গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্দিষ্ট কিছু প্রার্থীকে পদোন্নতি দেওয়ার অংশ হিসেবে আগে প্রশ্ন জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে এসব প্রশ্নের সমাধান খুঁজছেন তারা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সংস্থাপনের নিয়ম অনুযায়ী গ্রেড-৩ পদে যাদের চাকরি দুই বছর পূর্ণ হয়েছে তাদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহ্বান করতে হবে। দরখাস্তের সিনিয়রিটি অনুযায়ী এক পদের বিপরীতে চারজনকে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। অতীতে জেটিআই (জুনিয়র ট্রাফিক ইন্সপেক্টর) এবং স্টেশন মাস্টার গ্রেড-২ পদোন্নতি পরীক্ষায় দরখাস্ত আহ্বান করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান অতিরিক্ত প্রধান পরিবহন কর্মকর্তা সুজিত কুমার বিশ্বাস এ নিয়ম ভঙ্গ করে ঘুষ ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে তড়িঘড়ি করে পরীক্ষা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা ও স্টেশন মাস্টার অভিযোগ করেছেন, সুজিত কুমার বিশ্বাস একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে তাদের মাধ্যমে অগ্রিম ঘুষ গ্রহণ করে পদোন্নতি পরীক্ষা সম্পন্ন করতে উঠেপড়ে লেগেছেন। অনুমোদনকারী কর্মকর্তা রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান পরিবহন কর্মকর্তা না থাকা এবং কমিটির সদস্য সচিব সিনিয়র পারসোনাল অফিসার সিরাজ উল্লাহ ছুটিতে থাকা অবস্থায় কীভাবে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে তা নিয়ে স্টেশন মাস্টারদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া ২০১৭ জেটিআই পদে পদোন্নতি পরীক্ষায় রেলের ডিজির গঠিত তদন্ত কমিটি সিরাজ উল্লাহার বিরুদ্ধে ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছিল। তাকে এ ধরনের কোনো কমিটিতে না রাখার সুপারিশ করা হয়েছিল। কিন্তু এসব বিষয়কে আমলে না নিয়ে পুনরায় দুর্নীতি করতে স্টেশন মাস্টার গ্রেড-২ পদে পদোন্নতি পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে এমন অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।
গত ২০ এপ্রিল দেওয়া নোটিস অনুযায়ী ২৯ এপ্রিল (আজ) পদোন্নতি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। অথচ নিয়ম থাকলেও এখনও কমিটি সিনিয়রিটির ভিত্তিতে কোনো তালিকা প্রকাশ করেনি। পরীক্ষায় কারা অংশ নিতে পারছে তা নিয়েও অন্ধকারে রয়েছেন অনেকে। এর পর প্রায় ৩৫ জন প্রার্থী সময় বাড়ানোর আবেদন করলে অতিরিক্ত মহাপরিচালকের অফিস এক মাস পেছানোর আদেশ দিলেও সুজিত আগামী ৫ মে পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেন।
তবে এসব বিষয়ে জানতে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক সৈয়দ ফারুক আহম্মেদ ও অতিরিক্ত প্রধান পরিবহন কর্মকর্তার সুজিত কুমার বিশ্বাসের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাদের থেকে কোনো ধরনের সাড়া পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে রেলওয়ের মহাপরিচালক কাজী মো. রফিকুল আলম সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি শেয়ার বিজকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে আপনি বলেছেন বিষয়টি মাথায় রেখেছি। খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সুত্র:শেয়ার বিজ, এপ্রিল ৩০, ২০১৯