জামালপুর-দেওয়ানগঞ্জ রেলপথের জামালপুর কোর্ট রেলস্টেশনের ক্রসিং পয়েন্টে স্লিপারের সঙ্গে রেললাইন আটকানোর লোহার খিলান (ডগ স্পাইক) চুরি হয়ে যাচ্ছে। রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশল বিভাগ নিয়ম না মেনে চুরি যাওয়া লোহার খিলানের স্থলে কাঠের খিলান লাগিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই সেগুলো রোদে শুকিয়ে নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে। এতে ট্রেন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন এ স্টেশন হয়ে দুটি আন্ত নগর এক্সপ্রেস ট্রেনসহ পাঁচটি ট্রেন চলাচল করছে। ফলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, প্রায় পাঁচ বছর ধরে স্টেশন মাস্টারের পদ শূন্য থাকায় জামালপুর কোর্ট রেলস্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। তবে পাঁচজন গেটম্যান স্টেশনটিতে কর্তব্যরত আছেন। এ স্টেশনে চারটি লোকাল ট্রেন থামে। আগে থেকেই সময়ের ধারণা অনুযায়ী ও গার্ডের নির্দেশে ট্রেনচালক সেখানে ট্রেন থামান। যাত্রী ওঠানামা শেষে ট্রেন ছেড়ে যায়।
এ স্টেশনে দুটি রেললাইন আছে। স্টেশনটির কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণার পর থেকে প্রথম লাইনটি দিয়ে ট্রেন চলাচলের জন্য ক্রসিং পয়েন্ট ঠিক করে রাখা হয়েছে। দুটি আন্ত নগর এক্সপ্রেস তিস্তা, ব্রহ্মপুত্রসহ মোট পাঁচটি ট্রেন এ স্টেশন দিয়ে দিনে দুইবার দেওয়ানগঞ্জ-জামালপুরে চলাচল করে। তবে লোকাল ট্রেন ছাড়া অন্য ট্রেনগুলো এ স্টেশনে থামে না। ফলে অরক্ষিত এই কোর্ট স্টেশনটি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি লোহার খিলান চুরি হয়ে গেছে। প্রতিদিনই এ চুরির ঘটনা ঘটছে। ফলে বাধ্য হয়ে রেলের শ্রমিকরা কাঠের খিলান দিয়ে স্লিপারের সঙ্গে রেললাইন আটকে রাখছে। সেই কাঠের খিলানগুলোও একসময় রোদে শুকিয়ে নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়রা জানায়, দ্রুতগামী ট্রেন ক্রসিং পয়েন্ট অতিক্রম করার সময় রেললাইন অস্বাভাবিক ওঠানামা করে। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের ট্রেন দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
ক্রসিং পয়েন্টে কাঠের খিলান লাগানো প্রসঙ্গে জামালপুর রেলস্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার শেখ উজ্জ্বল মাহমুদ বলেন, ‘ক্রসিং পয়েন্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। তাই এখানে লোহার খিলান দিয়ে যদি রেললাইন আটকানো না থাকে তাহলে ট্রেন লাইনে প্রবেশের সময় লাইনচ্যুত হয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। জরুরি ভিত্তিতে সেখানে লোহার খিলান লাগানো দরকার। বিষয়টি আমি রেলওয়ের স্থানীয় প্রকৌশল বিভাগকে জানাব।’
রেলওয়ের জামালপুরের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) কবির হোসেন রানা বলেন, ‘শুধু জামালপুর কোর্ট স্টেশনেই নয়, জামালপুরের বিভিন্ন স্থানের রেললাইনে কাঠের স্লিপারের সঙ্গে লাগানো লোহার খিলান ও কংক্রিটের স্লিপারের সঙ্গে লাগানো লোহার ক্লিপ খুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। আমরা জানতে পারলে দ্রুত সময়ের মধ্যে সেগুলো আবার নতুন করে লাগিয়ে দিই। জামালপুর কোর্ট স্টেশনের ক্রসিং পয়েন্টে এমন হয়ে থাকলে দ্রুত সেখানে লোহার খিলান লাগানোর ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।’ বিভিন্ন স্থানে কাঠের খিলান লাগানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অনেক সময় বিভাগীয় চাহিদা মোতাবেক মালপত্র পেতে দেরি হয়। তাই সাময়িকভাবে কাঠের খিলান লাগানো হয়।’
সুত্র:কালের কন্ঠ, ১০ মার্চ, ২০১৯