আতিক রহমানঃ
রাষ্ট্রীয় সেবা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ রেলওয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থায় সরকার তথা জনগণের একটি শক্তিশালী যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ভূমিকা রাখছে। পৃথিবীর সর্বত্রই রেলের জনপ্রিয়তা ক্রমবর্ধমান। নিত্যনতুন সেবার মাধ্যমে যাত্রীদের আকৃষ্ট করে, ট্রেনের সংখ্যা বাড়িয়ে, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সহজলভ্য করা হচ্ছে। আর আমাদের দেশে নিরাপদ, আরামদায়ক, সাশ্রয়ী বাহন হিসেবে সাধারণ মানুষ যখন রেল রেলযোগাযোগমুখী হচ্ছে সে সময় যাত্রী সেবার প্রতি মনোযোগ না দিয়ে বিদেশী সংস্থার পরামর্শে রেলের ব্যয় কমানো এবং আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্থায়ী ট্যারিফ নির্ণয় পলিসি প্রণয়ন করে ভাড়া বৃদ্ধির পরিকল্পনা গ্রহণ করছি।
২০১২ সালে পরিস্থিতির সঙ্গে সমন্বয় এবং ব্যয় বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে যাত্রী সেবা বৃদ্ধির প্রতিশ্র“তি দিয়ে রেলের ভাড়া বাড়ানো হয়। কিন্তু গেল তিন বছরে তার প্রমাণ মেলেনি। বরং যাত্রী ও পণ্য পরিবহন উভয়ই হ্রাস পেয়েছে। ভাড়া বৃদ্ধির মত ঝুঁকি গ্রহণ না করেও যাত্রী সেবা বৃদ্ধি করা সম্ভব। কারণ ট্রেন প্রতি আয় শুধু যাত্রীর কাছ থেকে পাওয়া ভাড়ার ওপর নির্ভর করে না, কোচের সংখ্যা, অকুপেন্সি এবং ট্রেনের টার্ন অ্যারাইন্ড এর ওপর ট্রেন প্রতি আয় নির্ভর করে। অতত্রব ট্রেন পরিচালনায় এই বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিলে ব্যবস্থার কৌশল পরিবর্তন করলে ট্রেন প্রতি ব্যয় হ্রাস করে রেলকে স্বনির্ভর প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।
২০১২ সালে রেলওয়ের যাত্রী ভাড়া শতভাগ বৃদ্ধি পরবর্তী অবস্থাঃ
- ২০১১ সালে রেলওয়ের মোট পরিচালন ব্যয় ছিল প্রায় ১৪,৯১৮ মিলিয়ন টাকা। ২০১৪ সালে ভাড়া বৃদ্ধির পর রেলের মোট পরিচালন ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১৬,০১৭ মিলিয়ন টাকা।
- ২০১০ সালে রেলের লোকসান হয় ৭৫৮ কোটি টাকা এবং ২০১৪ ৮০৩ কোটি টাকা।
- ২০০৯ সালে ঢাকা-চট্টগ্রাম পথে সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রার সময় নির্ধারিত ছিল ৫.৫৫ মিনিট। ২০১৪ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.০৫ মিনিট পাঁচ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট।
- টিকিট প্রাপ্তির ভোগান্তি লাঘব হয়নি।
- ট্রেনের অব্যন্তরে এবং স্টেশনগুলোতে যাত্রী সেবার পরিবর্তন হয়নি।
- ২০১১ সালে রেলওয়ে পণ্য পরিবহন করে ২,৫৫৪ হাজার টন। ২০১৪ সালে ২,৩০০ হাজর টন।
- ২০১৩ সালে ট্রেন পরিচালন অনুপাত ছিল ১৯৪.৩ টাকা এবং ২০১৪ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০০.২ টাকা।
বাংলাদেশ রেওয়ের যাত্রী সেবার বর্তমান চিত্রঃ
রেলওয়ের উন্নয়নে পৃথক মন্ত্রণালয় গঠন, রেল বাজেট বৃদ্ধি, রেললাইন, লোকোমোটিভ ও কোচ বৃদ্ধি পেলেও সিটিজেন চার্টার অনুযায়ী বাংলাদেশ রেলওয়ে যাত্রী সাধারণকে কাঙ্খিত সেবা প্রদান করতে পারছে না। ২০১২ সালে শতভাগ ভাড়া বৃদ্ধির পর তিন বছর অতিবাহিত হলেও ভাড়া বাড়ানোর অনুপাতে যে হারে যাত্রী সেবা বৃদ্ধি হওয়ার কথা ছিল তা পরিলক্ষিত হয়নি। বরং কোন কোন ক্ষেত্রে অবনতি হয়েছে।
সুষ্ঠ টিকিট ব্যবস্থাপনার অভাবঃ
রেলযাত্রীদের ভ্রমনের শুরুতেই টিকিট প্রাপ্তি নিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এই ভোগান্তি যাত্রীদের শুধু ঈদ-নববর্ষ ইত্যাদি পালা-পার্বণে নয়, টিকিট না পাওয়ার সংকটে প্রতিদিনই ভুগতে হচ্ছে। টিকিট কাটতে গিয়ে নির্দিষ্ট বুথ খুঁজে না পাওয়া, নির্বিঘেœ টিকিট না পাওয়া, টিকিট কাটার পর সিটের দখল নিয়ে টানা হেঁচড়াসহ প্রতিদিন নানাভাবে ভোগান্তির ও শিকার হচ্ছে।
ট্রেনের সময়সূচী ঠিক না থাকাঃ
২০০৯ সালের পর রেলের উন্নয়নে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, যার বেশির ভাগই রেললাইন সংস্কার, নতুন রেলপথ নির্মাণ ও অবকাঠামো তৈরির প্রকল্প। অথচ গত কয়েক বছরে রেলওয়ের সময়ানুবর্তিতার কোনো উন্নয়ন হয়নি। ২০১৫ সালে ডিসেম্বর মাসে আন্তঃনগর ট্রেনের সময়ানুবর্তিতা ছিল ৮৭% এবং মেইল/ এক্সপ্রেস ট্রেনের ছিল ৪৭% । বর্তমানে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যেতে সময় লাগে ৭-৮ ঘণ্টা। অথচ নব্বইয়ের দশকে ৫ ঘণ্টায় এ পথে যাতায়াত করা যেত।
রেললাইন ও ট্রেন লাইনচ্যুতি: নিয়মতি রেললাইন সংস্কার না করা এবং এবং লাইন মেরামতে অনিয়মের কারণে প্রায়ই যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী ট্রেনের লাইনচ্যুতির ঘটনা ঘটছে। এতে করে সাধারণ যাত্রীদের প্রাণহানীসহ রেলকে আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। রেললাইন ও রেল ব্রীজ ঠিকমত সংস্কার না করায় পূর্বাঞ্চলে এমন ৩১ টি স্থান (লোকোমোটিভ রেস্ট্রিকশন) রয়েছে যেখানে লোকোমোটিভকে নির্ধারিত গতির চেয়ে ধীর গতিতে চলতে হয়। এতে করে ট্রেনের নির্ধারিত সময়সূচী ঠিক রাখা সম্ভব হয় না।
লোকোমোটিভ ও কোচের স্বল্পতাঃ
বাংলাদেশ রেলওয়ের মোট ২৯৩ টি লোকোমোটিভ আছে। এর মধ্যে ১৮৪ টি লোকোমোটিভের ইকনোমিক লাইফ ২০ বছর আতিক্রম হয়েছে। ১০১টির বয়স ৪০ বছরের অধিক একং প্রায় ৩৪% কোচ এবং ওয়াগনের বয়স ৩৫ বছরের অধিক। এছাড়া কোচ ও ওয়াগনের সংখ্যাও চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত বছর নভেম্বর মাসে পূর্বাঞ্চলে ১৫৪ টি লোকোমোটিভের মধ্যে ব্যবহার হার ছিল ৬৮.২০ শতাংশ এবং পশ্চিমাঞ্চলে মিটারগেজ ও ব্রডগেজ মিলে ১২৮ টির মধ্যে ব্যবহার হার ছিল যথাক্রমে ৮০% ও ৭৪.০৬ শতাংশ।
ফলে লোকোমোটিভ এর যান্ত্রিক ক্রটির কারণে ট্রেনের সময়সূচি এবং নির্ধারিত গতি প্রায়ই বিঘিত হচ্ছে। লোকোমোটিভ ও কোচ পুরাতন হয়ে যাওয়ায় প্রায়ই বিকল হয়ে পড়ে। গত বছর ডিসেম্বর মাসে লোকোমোটিভ কর্তৃক সময় অপচয়ের তথ্য বিশ্লষণ করে দেখা যায় ১০টি আন্তঃনগর ট্রেনের লোকোমোটিভ কর্তৃক সময় অপচয় হয়েছে ৪/১৫ ঘন্টা এবং যাত্রা পথে লোকোমোটিভ বিকল হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে ১৯ টি।
ট্রেনের অভ্যন্তরে ভোগান্তিঃ
ট্রেনের অভ্যন্তরে সিটের গিয়ার স্প্রিং ও ফোম নষ্ট, হাতল ভাঙ্গা, বাথরুমের দরজার লক ও বাতি নষ্ট। এসি বগিতে এসি নষ্ট, দরজা ও জানালার কাঁচ ভাঙা, কিছু ক্ষেত্রে লক নষ্ট থাকায় যাত্রী নিরাপত্তা ব্যাহত হচ্ছে। কাচবিহীন জানালাগুলো শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা সব ঋতুতেই যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়।
ভাড়া বৃদ্ধি করে পরিচালন ব্যয় হ্রাস সম্ভব নয়ঃ
রেলের পরিচালন ব্যয় হ্রাস করতে বিদেশি সংস্থার পরামর্শে রেল কর্তৃপক্ষ ভাড়া বৃদ্ধির পদক্ষেপ নিয়েছে। অথচ অতীতে বর্তমান সময়ের চেয়ে বেশি সংখ্যক স্টেশন ও লোকবল নিয়ে অধিক সংখ্যক ট্রেন পরিচালন করে স্বনির্ভর প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হতে ঘনঘন ভাড়া বৃদ্ধি করতে হয়নি। স্বাধীনতার পরবতী সময় ১৯৭৩ ও ১৯৭৫ সালে যথাক্রমে ৪৭১ ও ৪৭৫ টি স্টেশন এবং লোকবল ছিল ৪৯,৫৮৬ ও ৫৮,০৯০ জন। আর রেল পরিচালন ব্যয় ছিল ৯৪.৬ ও ৯৪.৩ শতাংশ। ২০১৪ সালে এসে ৪৫৬ এবং লোকবল ২৫,৬৪৬ জন হয়েছে। পাশপাশি পরিচালন ব্যয় দাঁড়িয়েছে ২০০.২ শতাংশ। বর্তমানে স্টেশন এবং লোকবল হ্রাস পাওয়ার পর ও রেলের পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শুধু তাই নয় বর্তমান এই ভাড়ায় বেসরকারিতে পরিচালিত ট্রেনসমূহ পরিচালন ব্যয় কমিয়ে মুনাফা অর্জন করতে পারলেও বাংলাদেশ রেলওয়ে পারছে না। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেনের রেলওয়ে ব্যবস্থাপনায় আয় হতো ১,৩৯,১০,৪০০টাকা আর বেসরকারিতে আয় হচ্ছে ১,৯১,১৮,৮০৮ টাকা। অনুরূপভাবে মহুয়া এক্সপ্রেস ও দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার ট্রেনের রেলওয়ের ব্যবস্থাপনায় আয় ছিল যথাক্রমে ৭২,০০০০০ ও ২,৩০,৮০,০০০ টাকা আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় আয় হচ্ছে ১,৮১,৪৪,০০০ ও ৩,৯৫,৯৫,১৭৬ টাকা।
ভাড়াবৃদ্ধি না করেও যাত্রী সেবা লাভজনক করা সম্ভবঃ
ট্রেন প্রতি আয় শুধু যাত্রীর কাছ থেকে পাওয়া ভাড়ার ওপর নির্ভর করে না, ভাড়া ছাড়াও আরো যেসব বিষয়ের ওপর ট্রেন প্রতি আয় নির্ভর করে তারমধ্যে রয়েছে ট্রেন প্রতি কোচের সংখ্যা, বিভিন্ন ধরনের যাত্রীবাহী কোচের কম্বিনেশন, কোচের যাত্রী ধারণক্ষমতা, কোচের সিটের অকুপেন্সি হার ও ট্রেনের টার্ন অ্যারাইন্ড ইত্যাদি। নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
ট্রেন প্রতি কোচের সংখ্যা বৃদ্ধিঃ
ট্রেন প্রতি আয়ের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো ট্রেনে কোচের সংখ্যা বা ট্রেনের দৈর্ঘ্য। যেসব ট্রেনে যাত্রী চাহিদা বেশি সেসব রুটের ট্রেনে কোচ সংখ্যা বাড়ালে আয় বৃদ্ধি করা সম্ভব। কোচের সংখ্যা বাড়লে ট্রেন থেকে আয় বাড়ে, কিন্তু খরচ সমানুপাতে বাড়াতে হয় না। কারণ রেলওয়ের অনেক খরচ কোচের সংখ্যার সাথে সম্পর্কিত নয়। যেমন: রেললাইন, ইঞ্জিন, গার্ড, চালক, প্লাটফর্ম ইত্যাদির অনেক খরচই কোচের সংখ্যার সাথে সম্পর্কিত নয়। উদাহরণ হিসেবে ঢাকা- চট্রগ্রাম, ঢাকা- জামালপুর, ঢাকা- মহনগঞ্জ উল্লেযোগ্য।
কোচের সিটের অকুপেন্সি হারঃ
কোচের অকুপেন্সির হার বা ধারণ ক্ষমতার কত শতাংশ যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোচ- কিলোমিটার প্রতি আয় শুধু যাত্রী ভাড়ার ওপরই নির্ভর করে না, একেকটি কোচে কতজন যাত্রী বহন করে তার ওপরও নির্ভর করে। কেননা একটি সিট খালি যাওয়া মানে যাত্রী থেকে আয়ের সুযোগ নষ্ট হওয়া। যেমন: ২০% অকুপেন্সি রেটের এবটি শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কোচকে কোনো অজনপ্রিয় ট্রেন থেকে সরিয়ে জনপ্রিয় ট্রেনের সাথে যুক্ত করে অকুপেন্সি রেট বাড়ানো যায়।
মৌসুম অনুযায়ী যাত্রীবাহী কোচ সংযোজনঃ
মৌসুম অনুযায়ী বিভিন্ন রুটে ট্রেনের চাহিদা অনুযায়ী কোচের কম্বিনেশন করে ট্রেনের আয় বাড়ানো যায়। বিশেষ করে শীত ও গ্রীষ্মকালে যে সকল ট্রেনগুলোতে যাত্রী চাহিদা বেশি থাকে সে সমস্ত ট্রেনে কোচ বৃদ্ধি করে আয় বাড়ানো সম্ভব। যেমন: ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে ব্রক্ষপুত্র ট্রেনের শোভন চেয়ারের ১৬৩ শতাংশ, তুর্ণা ট্রেনের ছিল ১৩৫ এবং কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের ছিল ১০৯ শতাংশ।
কোচের যাত্রী ধারণক্ষমতা বৃদ্ধিঃ
একটি ট্রেনে কোন ধরনের কোচ কয়টি থাকবে তার ওপরও ট্রেনপ্রতি আয় নির্ভর করে। বাংলাদেশ রেলওয়ের উভয় অঞ্চলে নভেম্বর মাসে এসি ও প্রথম শ্রেণীর সিটের চেয়ে সবচেয়ে বেশি চাহিদা ছিল শোভন টিকিটের। পূর্বাঞ্চলে নভেম্বর মাসে আন্তঃনগর ট্রেনের অকুপেন্সি ছিল এসি ৮৪%, স্নিগ্ধা ৮৩%, প্রথম শ্রেণী ৬২%, শোভন চেয়ার ৮৪% এবং শোভন ৯৩%।
ট্রেনের টার্ন অ্যারাইন্ডঃ
ট্রেনের টার্ন অ্যারাইন্ড বাড়িয়ে ট্রেনের ট্রিপ বৃদ্ধি করা সম্ভব। যা ট্রেনের আয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় ঢাকা থেকে চট্রগ্রাম যেতে সময় লাগে ৭/৮ ঘন্টা এবং প্রতিদিন ১২ টি ট্রেন চলাচলা করে। বর্তমানে ঢাকা- চট্টগ্রাম ৩২০ কি.মি এর মধ্যে ২৪০ কি.মি ডাবল লাইন নির্মাণ করার পরও ট্রেন সংখ্যা বাড়াতে পারিনি। যাত্রার সময় যদি ৫/৪ ঘন্টায় নিয়ে আসা যায় তাহলে ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি করে আয় বাড়ানো সম্ভব।
এছাড়া রেলের ভূসম্পত্তিসহ সম্পদের সুষ্ঠ ব্যবহার, পণ্য পরিবহনে মনোযোগ এবং পরিচালন ব্যবস্থা যুগোপযোগি করার মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়েকে স্বনির্ভর প্রতিষ্ঠান হিসেব গড়ে তুলে সম্ভব। রেল খাতের দিকে মনোযোগ দিলে এবং যত্ন নিলে এদেশে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে সমৃদ্ধি আনয়ন এবং অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া সম্ভব।
রেল জনগনের অর্থে সরকার পরিচালিত একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান। জনগনের যাতায়াত নিশিচত করা এবং সেবা প্রদান করাই এ প্রতিষ্ঠান সৃষ্টির মূল লক্ষ্য। মনে রাখতে হবে রাজস্ব বা বিদেশী ঋণ যেভাবেই রেলে অর্থ বরাদ্দ করা হোক না কেন, পরিশোধ জনগনকেই করতে হয়। তাই জনগনের অর্থে পরিচালিত এই প্রতিষ্ঠানটি জনগণকে কি পরিমাণ সেবা প্রদান করতে পারছে তা হয়ো উচিত রেলের লাভক্ষতির মানদণ্ড। রাষ্ট্রের সার্বিক কল্যাণের স্বার্থে গণপরিবহনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে, রেলকে আধুনিকায়ন ও সেবার মান বৃদ্ধি করে; গড়ে তুলতে হবে নিরাপদ ও শক্তিশালী গণপরিবহন ব্যবস্থা।
লেখকঃ আতিক রহমান, রেল গবেষক।