।। নিউজ ডেস্ক ।।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েতে ট্রেন চলাচলে পূর্বনির্ধারিত গতি কমিয়ে দেওয়ায় প্রায় সবগুলো ট্রেনই ১-৮ ঘণ্টা দেরিতে চলছে। ঈশ্বরদী জংশন ও বাইপাস স্টেশন হয়ে চলাচলকারী সবগুলো ট্র্রেন দেরিতে চলাচল করছে। সবচেয়ে বেশি দেরিতে চলছে চিলাহাটি-ঢাকা রুটের চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেন ও খুলনা রুটে চলাচলকারী রূপসা ও সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেন। চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেন সকাল ১০টা ৩৩ মিনিটে বাইপাস স্টেশনে যাত্রাবিরতি থাকলেও এটি সন্ধ্যা ছয়টা ৪৪ মিনিটে প্রবেশ করে। নাশকতার আশঙ্কায় ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়ায় সবগুলো ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, আগের সে অবস্থা এখন আর নেই। ধীরে ধীরে গতি বাড়ানো হচ্ছে। তবে কুয়াশার কারণে রাতের ধীরগতিতে চলছে এসব ট্রেন।
ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনের রেকর্ড থেকে জানা যায়, শনিবার চিলাহাটি থেকে খুলনাগামী রূপসা এক্সপ্রেস দুপুর দুইটায় যাত্রাবিরতি থাকলেও স্টেশনে আসে সন্ধ্যা সাতটা পাঁচ মিনিটে। শুক্রবার ঢাকা থেকে খুলনাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনটির যাত্রাবিরতি ছিল একটা ২০ মিনিটে। অথচ স্টেশনে প্রবেশ করে বিকেল চারটা ১০ মিনিটে। খুলনা থেকে চিলাহাটিগামী রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেন বেলা ১১টায় যাত্রাবিরতি থাকলেও আড়াইটায় প্রবেশ করে। ঢাকাগামী মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেন সোয়া এক ঘণ্টা দেরিতে আসে। এছাড়া সাঁগরদাড়ি এক্সপ্রেস, সীমান্ত এক্সপ্রেস, রাজশাহীগামী ঈশ্বরদী কমিউটার, টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে চলাচল করছে।
বাইপাস স্টেশনেও একই চিত্র। ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন ১০টা ২১ মিনিটে বাইপাস স্টেশনে যাত্রাবিরতির কথা থাকলেও আসে একটা ৫০ মিনিটে। এছাড়া একতা এক্সপ্রেস তিন ঘণ্টা, পদ্মা এক্সপ্রেস দেড়ঘণ্টা, বনলতা এক্সপ্রেস দুই ঘণ্টা, দ্রুতযান তিন ঘণ্টা, নীলসাগর এক্সপ্রেস চার ঘণ্টাসহ রংপুর এক্সপ্রেস, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, ঢালারচর এক্সপ্রেসসহ সবগুলো ট্রেন দেরিতে চলছে।
বাইপাসের স্টেশন মাস্টার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রায় সবগুলো ট্রেনই দেরিতে চলছে। সবচেয়ে বেশি দেরিতে চলছে চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেন।’
ঈশ্বরদী জংশনের স্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট মহিবুর ইসলাম বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিদের্শনা অনুযায়ী টেনের গতি কমিয়ে দিয়ে চলাচল করায় গন্তব্যে পৌঁছাতে দেরি হচ্ছে।’
পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে ট্রেনে নাশকতা বেড়ে যাওয়ায় ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। দিনের বেলায় ব্রডগেজ লাইনে ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করে থাকে। সেটি কমিয়ে ৭৫ কিলোমিটার করা হয়েছে। রাতে ৬০-৭০ কিলোমিটার বেগে চললেও পরে তা কমিয়ে ৫০ কিলোমিটারে নামিয়ে আনা হয়েছে। এছাড়াও রাতে ট্রেন পাইলটিং পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। অর্থাৎ রাতের একটি ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার কয়েক মিনিট আগে লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) ওই রুটে পাঠানো হয়। রেল ইঞ্জিনের কাজ হলো ট্রেন লাইন নিরাপদ কিনা সেটি পরীক্ষা করা। এটি সপ্তাহখানেক ধরে চলছে। তবে আজ রোববার রাতেই পাইলটিং পদ্ধতি শেষ হয়ে যাবে। এরই মধ্যে দিনে চলাচলকারী ট্রেনের গতি কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। রাতের ট্রেনেরও গতি বাড়ানো হবে। গতি বেড়ে গেলে আর শিডিউল বিপর্যয় থাকবে না।’
পশ্চিম রেলের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, ‘এরই মধ্যে ট্রেনের গতি বাড়ানো হয়েছে। তবে ঘন কুয়াশার কারণে রাতের ট্রেনগুলো এখন ধীরগতিতে চলছে।’