।। নিউজ ডেস্ক ।।
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় জোনের ২০টি স্টেশন ও স্টেশন সংলগ্ন রেলওয়ের হাজার কোটি টাকার জমি প্রভাবশালীদের দখলে চলে গেলেও উদ্ধারে কোনো তৎপরতা নেই কর্তৃপক্ষের। মাঝে মধ্যে রেলওয়ের এস্টেট বিভাগ অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ স্থাপনার ওপর নির্মিত দোকানপাট ও কলোনি উচ্ছেদ করলেও অভিযানের পরপরই পুনরায় জায়গা দখল করে ফেলে অবৈধ দখলদাররা।
এ ছাড়াও প্রতি রাতেই চুরি হয় রেললাইনের মূল্যবান লোহার পাত, নাট-বোল্টু ও স্লিপার ইত্যাদি। এ রেল জোনের বিভিন্ন স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বসবাসের জন্য নির্মিত ভবন অন্য পেশার মানুষের কাছে চড়া মূল্যে ভাড়া দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
অপর দিকে প্রভাবশালী মহল কর্তৃক রেলওয়ে পরিত্যক্ত জমি নিজেদের দখলে নিয়ে কোথাও কাঁচা, আবার কোথাও আধাপাকা টিনশেড ভবন নির্মাণ করে ভাড়া দিচ্ছে। আর এসব ঘর নি¤œ আয়ের মানুষকে ভাড়া দিয়ে মহিলা, শিশু ও পুরুষ শ্রমিকদের দিয়ে চালানো হচ্ছে মাদক কারবার। আবাসিক কোয়ার্টারগুলিতে বহিরাগতরা বসবাস করলেও সেখানে সরবরাহকৃত পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের বিল পরিশোধ করছে সংশ্লিষ্ট রেল বিভাগ।
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় জোনের ২০টি স্টেশনের মধ্যে ১৭টি স্টেশনই মৌলভীবাজার জেলায়। হরসপুর, মনতলা, নোয়াপাড়া, শায়েস্তাগঞ্জ, লস্করপুর, রশীদপুর, সাতগাঁও, শ্রীমঙ্গল, ভানুগাছ, শমসেরনগর টিলাগাঁও, মনু, লংলা, কুলাউড়া, ছকাপন, বরমচাল ও ভাটেরাসহ বিভিন্ন স্টেশন সংলগ্ন জমি অবৈধ দখল করে দোকানপাট ও ঘরবাড়ি করা হচ্ছে। তা ছাড়া একটি সঙ্ঘবদ্ধ চোরাইচক্র রেললাইনের পাথর, নাট-বোল্টু, স্লিপার ও কাঠ ইত্যাদি চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে।
কুলাউড়া-শাহবাজপুর প্রায় ২০ কিলোমিটার লাইনের কুলাউড়া, জুড়ি, দক্ষিণবাগ, কাঁঠালতলী, বড়লেখা, মুড়াউল ও শাহবাজপুর এই সাতটি স্টেশন নতুন করে নির্মাণ এবং নতুন রেললাইনের কাজ ৪০ ভাগ সম্পন্ন হলেও গত দুই-তিন বছর ধরে শাহবাজ লাইনের কাজ বন্ধ রয়েছে। বিশেষ করে কুলাউড়া জংশন স্টেশনের শত শত কোয়ার্টার বেদখলে চলে গেছে। কোয়ার্টারগুলোর ৪০ ভাগ ঘরে রেলওয়ের কর্মচারী আর ৬০ ভাগ ঘরে বহিরাগতরা থাকে। কুলাউড়া স্টেশনের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা মাসোহারার মাধ্যমে এসব কোয়ার্টার নিয়ে বাণিজ্য করছেন। এ ছাড়াও মোটা অঙ্কের উৎকোচ নিয়ে রেললাইনের দুই পাশে স্থাপনা নির্মাণের বৈধতা দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া জংশনের উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) জুয়েল আহমদ জানান, রেলওয়ের জায়গায় যারা অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করেছেন তাদের উচ্ছেদ করার জন্য রেলওয়ের এস্টেট ডিপার্টমেন্ট রয়েছে। আমরা বেশ কয়েকবার লিখিতভাবে জানিয়েছি। তারা ব্যবস্থা নিলে দখল প্রক্রিয়া কমে যাবে।
সূত্রঃ নয়াদিগন্ত