।। রেল নিউজ ।।
ঢাকা-নোয়াখালী রুটে চলাচলকারী ‘নোয়াখালী এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি আসন সংকট, প্রথম শ্রেণির কোনো আসন নেই, বৈদ্যুতিক বাতি-পাখা নষ্ট, টয়লেটে পানি না থাকাসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। নির্দিষ্ট আসনের কয়েক গুণ বেশি যাত্রী নিয়ে ঝুঁকিতে চলাচল করা এ ট্রেনের নানাবিধ সমস্যা সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ অবগত থাকলেও প্রয়োজনীয় কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি কখনো।
এ ছাড়া ট্রেনের প্রতিটি বগিতে সিটবিহীন যাত্রী, হকার, ছিনতাইকারী, ফকির, হিজড়াদের অসহনীয় যন্ত্রণা। নানাবিধ সমস্যা জর্জরিত নোয়াখালী এক্সপ্রেস ট্রেন কখনো নির্দিষ্ট সময়ে তার গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারছে না। ট্রেনটির কোচ ও আসন বাড়িয়ে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করলে বাড়বে রাজস্ব।
ব্রিটিশ আমল থেকে ঢাকা-নোয়াখালী রুটে চালু নোয়াখালীর একমাত্র ট্রেন ‘নোয়াখালী এক্সপ্রেস’। প্রথম শ্রেণির রিজার্ভেশন বগিতে ২৭টি সিট, ২টি লাগেজ ভ্যান ও ৬টি যাত্রীবাহী বগি নিয়ে প্রতিদিন ভরা জৌলুসে ঢাকা থেকে নোয়াখালী, আবার নোয়াখালী থেকে ঢাকায় ছুটে বেড়াত এ ট্রেনটি। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় বর্তমানে নোয়াখালী এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে বেহাল দশা বিরাজ করছে।
ট্রেনটিতে ৪টি বগি থাকলেও ২টি বগি যাত্রীসাধারণ ব্যবহার করার সুযোগ পাচ্ছে। বাকি ২টি বগি ডাক বিভাগ ও জেনারেটর রাখার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ২ বগিতে ১২০টি শোভন আসন থাকলেও প্রতিদিন পাঁচ শতাধিক যাত্রী বিভিন্ন স্টেশন থেকে টিকিট কেটে ট্রেনটিতে যাতায়াত করছে। ট্রেনটি ঢাকা থেকে নোয়াখালী পৌঁছতে প্রায় ১২ ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে টিকিট কেটেও দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়েই গন্তব্যে পৌঁছাতে হয় যাত্রীদের।
নোয়াখালী-ঢাকা রেলপথে এমনিতেই যাত্রীদের প্রচণ্ড ভিড় থাকে। বিশেষ করে এ অঞ্চলের যাত্রীরা সড়কের পরিবর্তে রেলপথকে অধিক নিরাপদ মনে করে থাকেন।
যাত্রীদের অভিযোগ, একদিকে নির্দিষ্ট আসনের কয়েক গুণ বেশি যাত্রীর গাদাগাদি, অন্যদিকে বগিগুলোতে নেই লাইট-ফ্যান। টয়লেটে নেই পানির ব্যবস্থা। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়তে হয় নারী ও শিশুদের।
ট্রেনটির দায়িত্বে থাকা কর্তাব্যক্তিরাও স্বীকার করেছেন যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি তাদের।
নোয়াখালী রুরাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (এনআরডিএস)। এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর, আবদুল আউয়াল বলেন, নোয়াখালী এক্সপ্রেস ট্রেনটি একেবারে ভগ্নদশা। এ সমস্যা দূরীকরণে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা বা মান উন্নয়ন করা দরকার, সেটা নেই। রেল কর্তৃপক্ষ একটু আন্তরিক হয়ে নতুন একটা পরিকল্পনা নিলে নোয়াখালীবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হবে।
‘নোয়াখালী এক্সপ্রেস’ ট্রেনের গার্ড আল আমিনও স্বীকার করেন, যে পরিমাণ আসন থাকার দরকার তা নেই। এ ছাড়া টয়লেটে পানি ও বিদ্যুৎ থাকে না।
ট্রেনটিতে বগি ও প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করলে যাত্রীরা যেমন নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবেন, তেমনি টিকিট বিক্রি ও মালামাল পরিবহনে সরকারের রাজস্ব বাড়বে বলেও মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্রঃ সময়নিউজ